Thursday, October 20, 2016

"অনিকেত প্রান্তর" আর্টসেল এর বিখ্যাত একটি গান এর সম্পর্কে অজানা তথ্য, একজন আর্টসেল ফ্যান হিসেবে জানা উচিত।

                                                                 
     




লিংকনদা যেভাবে বলেছিল একটি পত্রিকার সাক্ষ্যাতকারে  ঠিক সেভাবেই তুলে ধরা হলো।

লিংকনদা: " বলতে গেলে গল্পের মতোই শোনাবে। আমাদের এক বন্ধু রুম্মান আহমেদ। ওর চমৎকার লেখার ক্ষমতা আছে, কিন্তু ওর চিন্তা ধারা এবং গানে শব্দচয়ন একটু ভিন্ন ধাঁচের, যাকে কঠিন বলা যেতে পারে। সে একদিন প্রায় ৪ পাতার এক লিরিক নিয়ে আমাদের চারজন-আমি, এরশাদ, সাজু আর সিজানের কাছে নিয়ে আসে। লিরিকের লেন্থ দেখে তো আমাদের চোখ কপালে!! এত্ত বড় লিরিকে সুরই বা কীভাবে বসাবো আর গাইবোই বা কীভাবে? কিন্তু রুম্মান আহমেদের গানটির ভেতরের কথাগুলো স্পষ্ট করে বোঝালো। গানটির ভেতরকার কথাগুলো প্রত্যেক মানুষেরই মনের কথা হতে পারে। গানটির থিম আমাদের খুব ভাল লাগল। লিরিকটাতে প্রাণ দিয়ে গানে পরিণত করার এক ইচ্ছা আমাদের চারজনের মনে গেঁথে বসলো... ইচ্ছে থাকলেই তো হবে না; ৪ পাতার বিশাল লিরিকটাকে গান বানানো তো আর যা-তা কথা নয়! তখন আশার বাণী হিসেবে সিজান ভুবনবিখ্যাত ব্যান্ড ‘ড্রীম থিয়েটার’র ‘চেঞ্জ অব সিজনস’ গানটির উদারণ টানলো, ঘড়ির কাটাতে যার সময় ছিল ২৩ মিনিট। গানটা শুনে বিরক্তি তো আসেই না, বরং একটি লাইনের পর অথবা একটি কম্পোজিশনের পর আরেকটি শুনলে মনে হয় যে, ঠিকই তো, এরপর তো এইটাই হওয়ার কথা ছিল অথবা এই তালটার পর ওই তালেরই আসার কথা ছিল। মনে হলো, ২৩ মিনিটের সেই গানটি এমন বিখ্যাত হতে পারলে, রুম্মানের এই লিরিকেও গান বানানো অসম্ভভ নয়। তো এই গানটা আমাদের অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করলো। আমরা দিন-রাত এই ‘চেঞ্জ অব সিজনস’ গানটা বাজানোর চেষ্টা করতাম-বাজাতাম। এরপর প্রায় এক বছর আমরা এই গানটা নিয়ে কাজ করি। একটা সময় মোটামুটি গানটা হাতে এসে পড়লো। তখন আমরা রুম্মানের সেই ‘৪ পাতার লিরিককে’ গানে পরিণত করার উদ্যোগ নিলাম... মূলত এরশাদ ও সেজান মিলে লিরিকটিতে একটা সুর বসালো। আমি আর সাজুও বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করেছিলাম। এবার বিরাট এ গানটা গাইবার পালা। গানটা গাইলামও বটে! " সেজান ভাই: " সমস্যা বেঁধে গেলো শেষ দুই লাইন নিয়ে। সব লাইনে সুর বসাচ্ছি, কিন্তু শেষের দুটো লাইনকে কিছুতেই সুরে আনা যাচ্ছে না। গান তখন অলরেডি পনেরো মিনিটের হয়ে গেছে। বললাম, 'দোস্ত, শেষের লাইন দুইটা ফেলে দে।' রুম্মান বেঁকে বসলো ‘তাহলে আমি লিরিক দিব না। শেষের লাইন দুটো দিতেই হবে।' শেষ পর্যন্ত ঐ দুটো লাইনের জন্য গান আরও দেড় মিনিট লম্বা হলো। লিংকনদা: এভাবেই শেষ হলো। আর্টসেলের দ্বিতীয় অ্যালবামের টাইটেল ট্র্যাক হিসেবেই গানটা রিলিজ পেলো – ‘অনিকেত প্রান্তর...' ‘অনিকেত প্রান্তর’ শব্দটির অর্থ ‘No mans’ land। রুম্মান আহমেদ ভাইয়ের লেখা ‘অনিকেত প্রান্তর’ লিরিকটি মানুষের ‘অনিকেত প্রান্তর’ বা ‘No mans’ land’র চিন্তা-ভাবনা নিয়ে লেখা। দু’দেশের মাঝখানে এমন একটি মালিকানাবিহীন জায়গা- ‘No mans’ land’ থাকে, যেখানে চলে না কারও নিয়ম-শৃংখলা, রীতি-নীতি, বিধি-নিষেধ, তেমনি প্রত্যেক মানুষের মাঝেও একটি করে ‘No mans’ land থাকে। সেই ‘No mans’ land’ দাঁড়িয়ে, সেই স্বাধীনতার তাড়না থেকে এই গানটি লেখা। মানুষ স্বাধীন হলেও স্বাধীনভাবে তার সব স্বপ্নকেই জীবন দিতে পারে না। কিন্তু কেবল অনিকেত প্রান্তরে দাঁড়িয়েই সে তার স্বপ্নগুলোকেই স্বপ্নে হলেও জীবন দিতে পারে। বাস্তবে হয়তো সেগুলো ‘স্বপ্নের দলা পাকানো বাসি কবিতা, নষ্ট গান’ হয়েই ঝড়ে যায়!!
\m/ #Artcell
#Bloodcell

No comments:

Post a Comment